জেলার সোহেলের ঘটনা তদন্তে বেরিয়ে এলো থলের বিড়াল

ডেস্ক রিপোর্ট – গত বছরের ২৬ অক্টোবর চট্টগ্রাম কারাগারের জেলার সোহেল রানা বিশ্বাস ৪৪ লাখ টাকা, আড়াই কোটি টাকার এফডিআর, এক কোটি ৩০ লাখ টাকার চেক ও ১২ বোতল ফেনসিডিলসহ ভৈরব রেলওয়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে এখন কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারে। সেই ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে থলের বিড়াল বেড়িয়ে এসেছে। আর এতে ফেঁসে যাচ্ছেন আরও ৪৯ কর্মকর্তা, কর্মচারী ও পুলিশ।

এ ঘটনায় করা তদন্ত প্রতিবেদনটি গত সপ্তাহে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব ও তদন্ত কমিটির সদস্য সৈয়দ বেলাল হোসেন।

সেই সময়ে জেলার সোহেল রানাকে গ্রেফতারের ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মনিরুল আলমকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এই তদন্ত কমিটির অনুসন্ধানে দুর্নীতি ও অনিয়মের ভয়াবহ তথ্য বেরিয়ে আসে।

প্রতিবেদনে ৪৯ জনের তালিকায় কারা বিভাগের একজন উপ-মহাপরিদর্শক ( ডিআইজি) , দুইজন সিনিয়র জেল সুপার, সাতজন ডেপুটি জেলারও রয়েছেন। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী অভিযুক্ত পুলিশ, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হলেন, তৎকালীন ডিআইজি পার্থ গোপাল বণিক, সিনিয়র জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক, সিনিয়র জেল সুপার ইকবাল কবির চৌধুরী, জেলার সোহেল রানা বিশ্বাস, ডেপুটি জেলার মুহাম্মদ মুনীর হোসাইন, মো. ফখর উদ্দিন, মো. আতিকুর রহমান, মুহাম্মদ আবদুস সেলিম, হুমায়ূন কবির হাওলাদার, মনজুরুল ইসলাম, সৈয়দ জাবেদ হোসেন, সহকারী সার্জন ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ফার্মাসিস্ট রুহুল আমিন, রামেন্দ্র মজুমদার পাল ও কর্মচারী লায়েস মাজহারুল হক।

এছাড়া কারারক্ষীসহ অন্য কর্মচারীরা হলেন- মো. আবুল হোসেন, নূর আলম, গাজী আবদুল মান্নান, মো. তাজউদ্দিন আহমেদ, আবদুল করিম, মোসলেম উদ্দিন, বেলাল হোসেন, হিসাবরক্ষক এমদাদুল হক, ক্যান্টিন ম্যানেজার অলিউল্লাহ, এইচ এম শুভন, কাউছার মিয়া, আরিফ হোসেন, আনোয়ার হোসেন, মিতু চাকমা, শহিদুল মাওলা, শরিফ হোসেন, জুয়েল রানা, আনোয়ার হোসেন, স্বপন মিয়া, মহসীন দফাদার, আনজু মিয়া, লোকমান হাকিম, শিবারন চাকমা, ত্রিভূষণ দেওয়ান, অংচহ্না মারমা, রুহুল আমিন, শাহাদাত হোসেন, শাকিল মিয়া, আবদুল হামিদ, ইকবাল হোসেন, শামীম শাহ, মো. ওসমান, মো. বিল্লাল হোসেন ও অডিট টিমের সদস্য আবু বকর সিদ্দিকী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখিতদের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

এদিকে এই ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষও তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। ঘটনার পরদিন জেলার সোহেল রানাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। জেলার গ্রেফতারের পর তিনি ভৈরব রেলওয়ে পুলিশের কাছে জবানবন্দিতে জানিয়েছিলেন- জব্দকৃত টাকা ডিআইজি প্রিজন ও সিনিয়র জেল সুপারের। কারাগারে কীভাবে অবৈধভাবে প্রতিদিন টাকা রোজগার করে থাকে তার বিবরণও দিয়েছিলেন জেলার সোহেল রানা।

তদন্ত কমিটির প্রধান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মনিরুল আলম তদন্তে প্রতিবেদনটি মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন।